হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাকেরি বলেছেন, ইরানের প্রতিরক্ষা নীতি প্রতিরোধমূলক এবং যেকোনো আগ্রাসনের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার পক্ষে। উপযুক্ত সময়ে শত্রুর সর্বোচ্চ হুমকি মোকাবেলা করার বিষয়টি প্রতিরক্ষা নীতিতে গুরুত্ব পেয়েছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি সামরিক কমান্ডারদের এক সমাবেশে জোর দিয়ে বলেন, ইহুদিবাদী ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের মাধ্যমে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের রেড লাইন লঙ্ঘন করেছে।
মেজর জেনারেল বাকেরি আরও বলেছেন, ইহুদিবাদীদের জানা উচিত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সশস্ত্র বাহিনী নীতি-নৈতিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইরানের সশস্ত্র বাহিনী শত্রুর জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে যেমন তাড়াহুড়ো করবে না তেমনি বিলম্বও করবে না। সঠিক সময়ে সাহসিকতার সঙ্গে আগ্রাসীদেরকে নিখুঁত ও ভিন্নধর্মী জবাব দেওয়া হবে যাতে তারা অনুশোচনা করতে বাধ্য হয়।
দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'সত্য প্রতিশ্রুতি' নামক দু'টি অভিযানের কথা উল্লেখ করে জেনারেল বাকেরি বলেন, দু'টি অভিযানের কৌশল ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এমনকি ব্যবহৃত অস্ত্রের ধরণেও পার্থক্য ছিল। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ইরান যে জবাব দেবে তা ইহুদিবাদী নেতাদের জন্য অকল্পনীয় হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান গাজা ও দক্ষিণ লেবানন-এই দুই ফ্রন্টে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের খারাপ অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, লেবানন ও গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক অপরাধযজ্ঞ চালিয়েও ইহুদিবাদী ইসরায়েলি বাহিনী কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।
মেজর জেনারেল বাকেরি আরও বলেন, লেবাননে যুদ্ধের পেছনে দখলদারদের প্রধান লক্ষ্য ছিল তাদের দখলকৃত উত্তরাঞ্চলে (দক্ষিণ লেবানন সীমান্তবর্তী) নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করে সেখানকার ইহুদিবাদী বাসিন্দাদেরকে তাদের বসতিগুলোতে ফিরিয়ে আনা। কিন্তু তাদের এই স্বপ্ন বাস্তাবায়ন হয়নি বরং হাইফা ও তেল আবিবের মতো বড় শহরগুলোও অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ বলেন, ইহুদিবাদী বাহিনী গাজা উপত্যকায় হামলার পেছনে তাদের বন্দীদের মুক্ত করাকে প্রধান লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এখন আল-আকসা তুফান অভিযানের ১৪ মাস পরেও তারা এই বন্দীদের খুঁজে পায়নি, বেশ কয়েক মাসের সর্বাত্মক যুদ্ধের পরও ইহুদিবাদী সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে তাদের বন্দীদের মুক্তির জন্য পুরস্কার ঘোষণা করতে হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বছরের পর বছর ধরে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী তাদের প্রতিরক্ষা মতবাদের উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছে যাতে তা শত্রুর সর্বোচ্চ স্তরের হুমকি তড়িৎ মোকাবিলা, প্রতিরোধ ও ধ্বংস করে দিতে পারে।
মেজর জেনারেল বাকেরি বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও সব বাহিনীর প্রধান যেমনটি বলেছেন: আমাদের সামরিক কমান্ডার এবং রাজনৈতিক কর্মকর্তারা এর (ইসরায়েলের হামলার) প্রতিক্রিয়ার ধরন এবং সময় নির্ধারণে বিলম্ব করবেন না বা তাড়াহুড়োও করবেন না। কিন্তু একটি নীতি অপরিবর্তনীয়, আর তা হল ইরানের পবিত্র ভূমি লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলি সরকারকে ভারী মূল্য দিতে হবে।
আপনার কমেন্ট